সপ্তাহের
সাত দিনের মধ্যে একটি দিন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। তার মধ্যে জুমার দিন সবচেয়ে
গুরুত্বপূর্ণ। জুমার নামাজের ফজিলত অপরিসীম।
হজরত
আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
ইরশাদ করেন, ‘যখন জুমার দিন আসে এবং নামাজের সময় হয় তখন
মসজিদের দরজায় ফেরেশতারা অবস্থান করেন এবং পূর্বাগমনের হিসাব অনুযায়ী তাদের নামের
তালিকা করেন। যে সবার আগে আসে সে ওই ব্যক্তির মতো যে একটি হৃষ্টপুষ্ট উট কোরবানি
করে। তারপর যে আসে সে ওই ব্যক্তির মতো যে একটি গাভী কোরবানি করে। এরপর যে আসে সে
ওই ব্যক্তির মতো যে একটি মেষ বা বকরি কোরবানি করে। তারপর যে আসে সে ওই ব্যক্তির
মতো যে একটি মুরগি কোরবানি করে। তারপর যে আসে সে ওই ব্যক্তির মতো যে একটি ডিম
আল্লাহর রাস্তায় দান করে। তারপর ইমাম যখন বের হন তখন ফেরেশতারা তাদের দফতর বন্ধ
করে দেন এবং মনোযোগের সঙ্গে খুতবা শুনতে থাকেন।’ বুখারি।
হজরত
আউস ইবনে আউস আস সাকাফি (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি ‘যে
ব্যক্তি জুমার দিন গোসল করবে ও করাবে, অতঃপর সকাল সকাল প্রস্তুত হয়ে কোনো কিছুতে
সওয়ার হওয়া ছাড়া হেঁটে মসজিদে যাবে এবং ইমামের খুব কাছে বসে খুতবা শুনবে এবং
কোনোরূপ অনর্থক কাজ করবে না, তার প্রতি কদমে এক বছর নফল রোজা ও নামাজ আদায় করার
সওয়াব দান করা হবে।’
সুনানে আবু দাউদ।
হজরত
আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘কোনো
মুসলমান জুমার দিনে অথবা রাতে ইন্তেকাল করলে আল্লাহ তাকে কবরের ফিতনা, কবরের
সওয়াল-জওয়াব ও আজাব থেকে রক্ষা করবেন।’ তিরমিজি, মিশকাত।
হজরত
জাবির ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, মসজিদে নববীতে এমন একটি খেজুর
গাছের খুঁটি ছিল যার সঙ্গে হেলান দিয়ে নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
দাঁড়াতেন অর্থাৎ দাঁড়িয়ে খুতবা দিতেন। এরপর যখন তাঁর জন্য মিম্বার স্থাপন করা হলো,
তখন আমরা খুঁটি থেকে ১০ মাসের গর্ভবতী উটনীর কান্নার আওয়াজ শুনতে পেলাম। এমনকি যখন
নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মিম্বার থেকে নেমে এসে খুঁটির ওপর হাত
রাখলেন তখন কান্না বন্ধ হলো। বুখারি।
আমলের
দিক থেকে আল্লাহ তায়ালা যেসব দিনকে ফজিলত ও বৈশিষ্ট্যপূর্ণ করেছেন এর অন্যতম হলো
জুমার দিন। জুমার দিনের কিছু আমল রয়েছে।
১।
জুমার দিন গোসল করা। যাদের ওপর ফরজ তাদের জন্য এ দিনে গোসল করাকে রাসুল সা. ওয়াজিব
বলেছেন।
২।
জুমার নামাজের জন্য সুগন্ধি ব্যবহার করা।
৩।
মিস্ওয়াক করা।
৪।
উত্তম পোশাক পরিধান করে সাধ্যমতো সাজসজ্জা করা।
৫।
মুসল্লিদের ইমামের দিকে মুখ করে বসা।
৬।
মনোযোগ সহকারে খুত্বা শোনা এবং খুত্বা চলাকালীন চুপ থাকা- এটা ওয়াজিব।
৭।
আগে থেকেই মসজিদে যাওয়া।
৮।
সম্ভব হলে পায়ে হেঁটে মসজিদে যাওয়া।
৯।
জুমার দিন ও জুমার রাতে বেশি বেশি দরুদ পাঠ করা।
১০।
নিজের সবকিছু চেয়ে এ দিন বেশি বেশি দোয়া করা।
১১।
কেউ মসজিদে কথা বললে ‘চুপ
করুন এতোটুকুও না বলা।
১২।
মসজিদে যাওয়ার আগে কাঁচা পেঁয়াজ-রসুন না খাওয়া ও ধূমপান না করা।
১৩।
খুত্বার সময় ইমামের কাছাকাছি বসা। কোনো ব্যক্তি যদি জান্নাতে প্রবেশের উপযুক্ত
হয়, কিন্তু ইচ্ছা করেই জুমার নামাজে ইমাম থেকে দূরে বসে, তবে সে দেরিতে জান্নাতে
প্রবেশ করবে।
১৪। এতোটুকু জোরে আওয়াজ করে কোনো কিছু না পড়া, যাতে অন্যের ইবাদত ক্ষতিগ্রস্ত হয় বা মনোযোগে বিঘ্ন ঘটে।
#নারায়ণগঞ্জ_প্রতিদিন_ডেস্ক
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন