দৈনিক নারায়ণগঞ্জ ডেস্কঃ: বাংলাদেশে
করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি রোধ করার জন্য ১২ দফা সুপারিশ করেছে স্বাস্থ্য
অধিদপ্তর। গত ১৬ই মার্চ মঙ্গলবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের সভাপতিত্বে
কোভিড-১৯ প্রতিরোধ ও বর্তমানে করণীয় সম্পর্কে জরুরি সভা হয়। ওই সভায় কোভিড-১৯
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও সংক্রমণ রোধ করার জন্য ১২টি প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়। এসব
প্রস্তাব স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠানো হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মুখপাত্র এবং এনসিডিসি শাখার পরিচালক মোহাম্মদ
রোবেদ আমিন জানিয়েছেন, বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বৈঠক করে এই সুপারিশগুলো মন্ত্রণালয় এবং
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠানো হয়েছে। তিনি জানান, এখানে যেহেতু পলিসির নানা
সিদ্ধান্তের ব্যাপার রয়েছে, সরকার পরবর্তীতে যে সিদ্ধান্ত নেবে, সেভাবে স্বাস্থ্য
অধিদপ্তর বাস্তবায়ন করবে। বাংলাদেশে করোনা ভাইরাসে সংক্রমণের হার বেশ কমে এলেও গত
কয়েকদিন ধরে তা আবার বাড়তে শুরু করেছে। ১৭ই মার্চ বুধবারও ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে
করোনাভাইরাসে শনাক্ত হয়েছেন ১,৮৬৫ জন আর মৃত্যু হয়েছে ১১ জনের। এর আগে সর্বশেষ
১,৮৭৭ জন রোগী শনাক্ত হয়েছিল গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর। এ নিয়ে বাংলাদেশে মোট
আক্রান্ত হয়েছেন ৫ লাখ ৬২ হাজার ৭৫২ জন।
সংক্রমণ রোধে যেসব প্রস্তাব
দেওয়া হয়ঃ-
১. সম্ভব হলে সম্পূর্ণ লকডাউনে যেতে হবে। না হলে অর্থনৈতিক
কর্মকাণ্ডের সমন্বয় রেখে যেকোনো জনসমাগম বন্ধ করার সুপারিশ করেছে স্বাস্থ্য
অধিদপ্তর।
২. কাঁচাবাজার, পাবলিক ট্রান্সপোর্ট, শপিংমল, মসজিদ, রাজনৈতিক সমাগম,
ভোট অনুষ্ঠান, ওয়াজ মাহফিল, রমজান মাসের ইফতার মাহফিল ইত্যাদি অনুষ্ঠান সীমিত
করতে হবে।
৩. যেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে, সেগুলো বন্ধ রাখতে হবে।
অন্যান্য কার্যক্রমও সীমিত করতে হবে।
৪. যেকোনো পাবলিক পরীক্ষা (বিসিএস, এসএসসি,
এইচএসসি, মাদ্রাসা, দাখিলসহ) নেওয়া বন্ধ রাখতে হবে।
৫. কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের আইসোলেশন করার পদক্ষেপ নিতে হবে।
৬. যারা রোগীদের সংস্পর্শে আসবে,তাদর কঠোর কোয়ারেন্টিনে রাখার
ব্যবস্থা করতে হবে।
৭. বিদেশ থেকে বা প্রবাসী যারা আসবেন, তাদের ১৪ দিনের কঠোর
কোয়ারেন্টিনে রাখার ব্যবস্থা করতে হবে। প্রয়োজনে এই ব্যাপারে সামরিক বাহিনীর
সহায়তা নেয়া যেতে পারে।
৮. আগামী ঈদের ছুটি কমিয়ে আনা যেতে পারে।
৯. স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়ে আইন আরও জোরালোভাবে কার্যকর করতে হবে।
১০. পোর্ট অব এন্ট্রিতে জনবল আরও বাড়াতে হবে এবং নজরদারির কার্যক্রম
জোরদার করতে হবে।
১১. সব ধরনের সভা ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে করার উদ্যোগ নিতে হবে।
১২. পর্যটন এলাকায় চলাচল সীমিত করতে হবে।
এর আগে গত ১৩ই মার্চ সারাদেশে মাস্ক ব্যবহার নিশ্চিত করাসহ
স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ব্যাপারে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে একটি প্রজ্ঞাপন জারি
করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, সংক্রমণের হার নিয়ন্ত্রণ করার জন্য সবাইকে মাস্ক
পরিধানসহ স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন নিশ্চিত করতে হবে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন